নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার তল্লা জামাইবাজার এলাকায় গ্যাস বিস্ফোরণের স্থানটি পরিদর্শন করেছে তিতাসের তদন্ত কমিটি। সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত তিন সদস্যর তদন্ত কমিটির তিন সদস্য পরিদর্শন করেন। এরআগে দগ্ধ ১১ জনের মধ্যে আলেহা বেগম (৪২) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলের বার্নিক ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাত ১টায় আলেহা বেগমের মৃত্যু হয়।
নরসিংদী আঞ্চলিক অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী অজিত চন্দ্র দেব জানান, তিতাসের তিন সদস্য তদন্ত কমিটির মধ্যে সদস্য আমি ও আহবায়ক তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক(অপারেশন)অতিরিক্ত দায়িত্বে শফিকুল ইসলাম, ও সদস্য ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন বিস্ফোরণের স্থানটি পরিদর্শন করেছি। বাড়িওয়ালা ও আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তদন্ত প্রতিবেদন তৈরী করতে তথ্য উপাথ্য সংগ্রহ করেছি। তবে তদন্তের স্বার্থে এখন কিছুই বলা যাচ্ছেনা।
এদিকে নিহত ওই নারীর মেয়ে দগ্ধ মীম আক্তারের স্বামী বিল্পব জানান, গাজীপুরে একটি গার্মেন্টে কাজ করায় তিনি ওই বাড়িতে মাসে একবার স্ত্রী সন্তানের খোঁজখবর নিতে আসতেন। তাই ঘটনার পর তিনিই হাসপাতালে থেকে পরিবারের ছয়জনের চিকিৎসা করাচ্ছেন। এ পর্যন্ত অনেক টাকা খরচ হয়েছে তাদের চিকিৎসায়। এখন ধারদেনার জন্য কারও কাছেই টাকা পাচ্ছেন না।
বিপ্লব আরও জানান, তার শাশুড়ি আলেয়া বেগম আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার শরীরের ৯৫ ভাগ দগ্ধ হয়েছে। তার শ্বশুর হাবিবুর রহমান (৫৬), শ্যালক লিমন (২০), স্ত্রী মীম আক্তার (২২), তার দুই মাসের শিশুপুত্র মাহির আহমেদ ও নানি শাশুড়ি সমেত্তা বেগমকে (৬৫) বেডে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তাদের মধ্যে আলেহা বেগমকে দুই ব্যাগসহ আরও আট ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করতে বলেছেন চিকিৎসক। নির্ধারিত সময়ে রক্ত সংগ্রহ করতে না পারায় তার শাশুড়ি আলেহা বেগম মারা গেছেন। তাদের শরীরের রক্ত একেকজনের একেক গ্রুপ। তাই রক্ত কিনতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের পরিবারের দগ্ধ সাতজনের মধ্যে আমার শ্যালিকা সাথী সুস্থ হয়েছে এবং দুর্ঘটনায় দগ্ধ আরেক পরিবারের চারজনের সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। দুর্ঘটনার পর সদর ইউএনও আরিফা জহুরান উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়। সেই টাকা প্রথম দিনেই শেষ হয়ে গেছে।
গত শুক্রবার ভোরে বিস্ফোরণের পর পরিদর্শনে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ ওই বাড়িটি সিলগালা করে দেয়া হয়। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সদস্য সচিব করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়।
Leave a Reply