নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রাসীদের কুনজর থেকে নিজের এবং পরিবারের সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন গৃহবধূ টুম্পা। জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মুসাপুর ইউনিয়নের মালিবাগ এলাকার সৌদি প্রবাসী তারিকুল ইসলামের স্ত্রী মুক্তা বেগম টুম্পার উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা ও ধর্ষণের চেষ্টা করে সন্ত্রাসী মনির, আলী আকবর, নাসির, ওয়াসিম, বাবুল, জহিরুল, মাসুম, আমু, আলামিন ও তাদের সহযোগী সন্ত্রাসীরা। মুক্তা বেগম টুম্পার চিৎকারে ধর্ষণ ও হত্যায় ব্যর্থ হয়ে এসময় তারা ব্যাপক লুটপাট করে মোবাইল ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী কান্নাজরিত কণ্ঠে মুক্তা বেগম টুম্পা সংবাদ সম্মেলন করে অবিলম্বে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসী ও তাদের পিছনের ইন্ধনদাতাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
শনিবার (১৩ মার্চ-২০২১ইং ) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী মুক্তা বেগম টুম্পা। লিখিত বক্তব্যে মুক্তা বেগম টুম্পা উল্লেখ করেন, আমি একজন গৃহিনী আমার স্বামী একজন প্রবাসী হিসাবে দীর্ঘদিন যাবত দেশের বাহিরে কর্মরত আছে। আমার ৭ বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। ইতিপূর্বে আমাদের ক্রয়কৃত বাড়ীর জায়গা ঠিকমতো বুঝিয়ে না পাওয়ায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করিলে পুলিশের সহযোগিতায় জায়গার সমস্যা সমাধান হয়। আমার প্রতিপক্ষ তথা উল্লেখিত এলাকার এ কুচক্রি মহলটি পুলিশের ভয়ে এ সমাধান মেনে নিলেও আমার বিরুদ্ধে বিভিন্নসময়ে বিভিন্নভাবে মিথ্যাচার, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে আসছে। এ চক্রের মুল হোতা ও চক্রটিকে ইন্ধনদাতা হিসেবে কাজ করছে একই এলাকায় বসবাসকারী আসলাম।
তারই ধারাবাহিকতায় ও পুর্ব শত্রুতার জের ধরে গত ৫ই মার্চ এলাকার শত্রু পক্ষ বিল্লাল তার ১৫ বছরের ছেলেকে দিয়ে আমার ছেলেকে অহেতুক মেরে রক্ত ক্ষরন ঘটায়। বিল্লালের ছেলে কেন আমার ছেলেকে মেরেছে বিষয়টি জানার জন্য তার বাড়িতে গেলে সেখানে তারা আমাকে অশ্লিল ভাষায় গালাগালি করে এবং আমার ছেলেকে শ্বাসরোধ করে মারার চেষ্টা করে। পরে আমি সেখান থেকে ছেলে সহ নিজের জীবন বাঁচিয়ে চলে এসে বন্দর থানায় এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করি।
বন্দর থানা পুলিশ তদন্ত করে এর সত্যতা পেলেও কুচক্রি মহলের কিছু ক্ষমতাধরদের কারনে তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে সক্ষম হচ্ছেনা। আমি কি অপরাধ করেছি তার কাছে যে, সে আমার বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ লেলিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার করে মানববন্ধন করেছে।
মানববন্ধন থেকে কিছু নামধারী সাংবাদিকদের দিয়ে মনগড়া ভিডিও তৈরী করে এবং পুলিশের সাথে কথা বলে তারা আমার পূর্বের অভিযোগ গুলো নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। আমার চারিত্রিক ও মানহানিকর অপপ্রচার করার জন্য তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সোস্যাল মিডিয়া তথা ফেসবুকে একটি ভিডিও আপলোড করে এতে সমাজে আমার মান-সম্মান নষ্ট হয়েছে।
অত্র এলাকায় আমার পক্ষ স্বাক্ষীদের উপর হামলা করার চেষ্টা করে এমনকি তাদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে যেন কোন প্রকার আমার পক্ষে পুলিশের কাছে সাক্ষী না দিতে পারে। ঐ সকল সাক্ষীদের ঘর ছাড়া করে পরে পুলিশ কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেনকে তাদের অপকর্মের ধারন করা ভিডিও ফুটেজ দেখালে সে তাৎক্ষনিক পুলিশ পাঠিয়ে আমার স্বাক্ষীদের ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়।
তাদের অপকর্মের কথা প্রতিবাদ করিলে তারা ইতিপূর্বেও আমাকে প্রানে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় এবং আমি যখনই আইনের শরণাপন্ন হই, তখন তারা আমাকে নিয়ে আজে বাজে কথা বলতে থাকে। আইনের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে বলেই আমি পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে থাকি কারন আমার স্বামী বিদেশ থাকে, প্রতিনিয়ত নিরপত্তা কে দিবে ?
আমাকে অসহায় পেয়ে আমার সতিত্ব নষ্ট করতে টেলিফোনে হুমকি দেয় মনির, আলী আকবর, নাসির, ওয়াসিম, বাবুল, জহিরুল, মাসুম, আলামিন সর্ব গং মালিবাগ, চান্দের বাড়ী, থানা বন্দর। আমি কোন উপায়ন্তর না পেয়ে বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানাই পরে শত্রু পক্ষ আমাকে বলে তার বিরুদ্ধে যে ভিডিও করেছি তা ফেসবুকে ছেড়ে দিবো আমাদের কথায় রাজি না হলে। পরবর্তিতে তারা স্থানীয় কিছু মহিলা দিয়ে আমার বিরুদ্ধে আজে বাজে কথা শিখিয়ে একটি ভিডিও তৈরী করে সেটা ফেসবুকে ছাড়ে, এতে আত্মীয় মহলে আমার মান-সম্মান ক্ষুন্ন হয়। একজন মেয়ে হয়ে আমার সতিত্বে কলঙ্কর দাগ যেন না লাগে সে ব্যাপারে আমি এই সকল নরপিচাশদের সাথে যুদ্ধ করতে করতে আজ আমি ক্লান্ত তাই আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে সমাজের বিবেকবান সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয়েছি ন্যায় বিচার পেতে, সেই সাথে সমাজের এই সকল অপরাধিদের মুখোশ উম্মোচন করতে। আজ আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং নিজ বাড়ী ছেড়ে আমাকে অনত্র থাকতে হচ্ছে।
বন্দর থানা পুলিশ বিষয়টি অবগত আছে কিন্তু তারা এলাকার ক্ষমতাশালীদের কারনে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছেনা তবে আমি ন্যায় বিচার পেতে ও আমার জীবনের নিরাপর্তার জন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আজই লিখিত আকারে অভিযোগ দায়ের তথা মামলা করবো।
এই সকল চিহ্নিত অপরাধীরা ভবিষ্যতে যেন সমাজের আর কোন অসহায় অবলা নারীদের চরিত্র নিয়ে কথা না বলতে পারে, সন্ত্রাসী হামলা না করতে পারে সে ব্যাপারে আমি আপনাদের সকলের সহযোগিতা সহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
সাংবাদিক সম্মেলনে ভুক্তভোগী মুক্তা বেগম টুম্পার সাথে উপস্থিত ছিলেন,তার স্বামীর বড় বোন মাকসুদা বেগম ও ৭ বছর বয়সী একমাত্র ছেলে তুহিন।
Leave a Reply