লজিং মাস্টার প্রতারক গিয়াস উদ্দিন ভেন্ডার জনগনের সাথে জালিয়াতি, প্রতারনা করে এখন দলের সাথেও প্রতারনার বিষোধ অভিযোগ উঠেছে। মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক পরিচয়টিও ভূয়া ও জালিয়াতি। মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্যও না। কোন প্রতারক, চিটার, বাটমার, প্রতারক, ভূমিদস্যুসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি জাতীয় পার্টির হতে পারে না।
গিয়াস উদ্দিন ভেন্ডার মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক পরিচয় দেওয়ার কারনে সাংগঠনিক ভাবেসহ আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নিবে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি এমনই কথা জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও বন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু। গিয়াসউদ্দিন ৯০ দশকে সোনারগাঁও হতে বন্দর খানবাড়িতে মোতালেব খানের বাড়িতে লজিং মাস্টার হিসেবে থাকতে শুরু করে। ১৯৯৩ সালে মোতালেব খানের মেয়েকে বিয়ে করে ঘর জামাই বনে যায়। খান বাড়িতে বিয়ের পর তাকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রায় ২ যুগে গিয়াসউদ্দিন ভেন্ডার হতে চৌধুরীসহ শত শত কোটি টাকার মালিক হন। শুধু বন্দরের আমিনে ৩টি, র্যালীতে ৩ টি, একরামপুর ইস্পাহানি এলাকায় ৮/১০ টি বিলাশ বহুল আট্রালিকা রয়েছে। তার নামে – বেনামে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমান বিশাল। প্রতারক, জালিয়াতির সর্দার গিয়াস উদ্দিন ভেন্ডারের বিরুদ্ধে দূর্নীতি দমন কমিশনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।
এক বিবৃতিতে জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও বন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু বলেন, আমি গত ৫ মে শারিরিক চিকিৎসার জন্য ভারত ছিলাম। ১৩ মে দেশে এসে শুনি জালিয়াতি ও প্রতারনা মামলায় গিয়াস উদ্দিন ভেন্ডার গ্রেফতার হয়েছে। সেখানে একজন প্রতারক, জালিয়াত গিয়াস উদ্দিন ভেন্ডার মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক পরিচয় দিয়েছে। গিয়াস উদ্দিনের মত সমাজে চিহৃিত বাটমার, চিটার, ভূমিদস্যু জাতীয় পার্টির আহবায়ক মানে। ওর মত লোক মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্য হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। তারপর আবার আহবায়ক। চেয়ারম্যান সানু চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, গিয়াসউদ্দিন ভেন্ডার যদি মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়কের কোন কাগজ দেখাতে পারে তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দিব। গিয়াস উদ্দিন ভেন্ডার জাতীয় পার্টির পূর্বেও ছিল না, এখনও নেই। জাতীয় পার্টিতে কি নেতার অভাব দেখা দিয়েছে যে বাটমার গিয়াস উদ্দিন ভেন্ডারকে দলে নিতে হবে। কোন ব্যক্তি যদি অপকর্ম করে তার ফল তাকেই ভোগ করতে হবে। সেজন্য সংগঠন তার অপকর্মের কালিমা বহন করবে না। আর গিয়াস উদ্দিন ভেন্ডার জেলা বা মহানগর জাতীয় পার্টি কিছু না। বিভিন্ন জায়গায় গিয়াস উদ্দিন ভেন্ডার মহানগর জাতীয় পার্টি আহবায়ক পরিচয় দিয়েছে সেজন্য অচিরেই সাংগঠনিক ভাবে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।
নারায়নগঞ্জ-৫ আসনের প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করি। কোন প্রতারক, চিটার, বাটমার, জালিয়াত, ভূমিদস্যু জাতীয় পার্টি রাজনীতি করার যোগ্যতা রাখে না। নারায়নগঞ্জ- ৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমান ভাই ও নারায়নগঞ্জ -৩ আসনের সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা ভাই নিজেরা সচ্চতার রাজনীতি করে। ওরমত লোক জাতীয় পার্টি করবে কিভাবে। সেলিম ওসমান এমপি প্রায় ১শ’৩০ কোটি টাকা খরচ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করেছে। কোন অন্যায়কারীকে সেলিম ওসমান এমপি ও লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি ভাই প্রশ্রয় দেয় না।
গিয়াস উদ্দিন ভেন্ডার ভবিষ্যতে কোন জায়গায় জাতীয় পার্টি আহবায়ক পরিচয় দিলে তাৎক্ষনিক জেলা আহবায়ক সানাউল্লাহ সানুকে জানানোর জন্য জনগনের প্রতি বিশেষ অনুরোধ করেছেন।
উল্লেখ্য যে, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ বন্দর উপজেলার বন্দর খেয়াঘাট সংলগ্ন গিয়াসউদ্দিন কমপ্লেক্স থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
বুধবার (১১ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের ওসি শাহ্ জামান গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আজিজুর রহমান মিঠু নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধিন জমি স্বাক্ষর নকল করে এবং জাল দলিল সৃজনের মাধ্যমে অন্যত্র বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভোগি নারায়ণগঞ্জের একটি আদালতে এ সংক্রান্ত মামলার আবেদন করলে ৮ মে আদালত অভিযোগের তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করে।
বন্দরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ গিয়াসউদ্দিন ভেণ্ডার বন্দর উপজেলা দলিল লিখক সমিতির সভাপতি এবং জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ঘনিষ্ঠজন হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন। এছাড়াও তিনি উপজেলার সর্বাধিক বিতর্কিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি।
স্থানীয়রা তাকে লজিং মাস্টার হিসেবে চিনতেন। সেই ব্যক্তি পরবর্তি সময়ে দলিল লিখক হয়ে রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যান। তার রয়েছে অঢেল ভূ-সম্পত্তিসহ বেশ কয়েকটি অট্টালিকা। যার মধ্যে অন্যতম বন্দর খেয়াঘাট সংলগ্ন গিয়াসউদ্দিন কমপ্লেক্স।
এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে দলিল লিখক সমিতির ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মাসতের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ দলিল লিখকরা আন্দোলনও করেছিল। এক এগারোর শেষের দিকে সাধারণ মানুষের নানা অভিযোগে সেনা বাহিনীর হাতেও তিনি আটক হয়েছিলেন। অপরদিকে নবীগঞ্জ এলাকা থেকে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসটি অবৈধ ক্ষমতার বলে নিজের সুবিধার্থে নিজ ভবনের পাশে নিয়ে আসার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
গিয়াসউদ্দিন জাল জালিয়াতির মাধ্যমে, জাল দলিল সৃজন করে বিভিন্ন সময় প্রতারণা করে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে, প্রভাবশালীর ছত্রচ্ছায়ার কারণে তার বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ হয়নি। শেষতক তার জালজালিয়াতির শিকার আজিজুর রহমান মিঠুই প্রথমবারের মত আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। গিয়াসউদ্দিন ভেণ্ডারের গ্রেপ্তারের খবরে স্থানীয় অনেকেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply