শত বর্ষের শুভ লগ্নে তোমাকে স্যালুট হে পিতা,
হৃদয়ের ক্ষতে বিক্ষোভ রক্তে লেখা স্মৃতি মনে পড়ে।
হাজার বছরের বাংলার শ্রেষ্ঠতম সন্তান শেখ মুজিব
তুমি চিরঞ্জীবী দেশদ্রোহী এ যুগের নমরুদ, ফেরাউন,
এজিদের হাতে তুমি স্বজন সহ দিয়েছো প্রাণ।
সেই থেকে নয়ন সম্মুখে তুমি নাই,
নয়নের মাঝখানে নিয়েছো যে ঠাই।
১৭ ই মার্চ তোমার জন্মদিন।
লাখো কোটি বাঙালির শুভ দিন।
১৫ই আগস্ট ব্যাক্তি মুজিবের রক্ত স্নানের মধ্য দিয়ে
তোমার মৃত্যুঞ্জয়ী আদর্শে রূপান্তরিত হওয়ার দিন।
ইতিহাসের চাইতেও এক অভ্রান্ত মহা কিংবদন্তি।
বাঙালি জাতির হাজার বছরের সাধনায় পাওয়া শেখ মুজিব তুমি কি? তুমি কে?
তার সবটুকু প্রকাশের ভাষা নেই তুমি বাঙালির বিবেকের কন্ঠস্বর,
তুমি বাংলার পলিমাটির ঘ্রাণ,
শষ্যময় প্রান্তের শ্যামলিমা,
তুমি বাঙলার আকাশের ঔধার্য্য।
তুমি বাঙলার পাখির কুজন। রাখালের মেঠো সুর,
মাঝির ভাটিয়ালি, বৈষ্ণবের পদাবলি,
বাউলের একতারার সুরধ্বনি।
বঙ্গবন্ধু তুমি বাংলার কৃষকের আশা।
শেখ মুজিব তুমি পদ্মা, মেঘনা, যমুনা আড়িয়ালখার শান্ত জলধারা,
বৈশাখী এবং শ্রাবণের অবিরল বর্ষণ,
তুমি লক্ষ কোটি বাঙালির অন্তরে নিভৃতে লালিত বিশ্বাস।
তুমি আপামর বাঙালির ছন্দবন্ধ সঙ্গীত বাংলার নয়নমনি।
আমি বাঙালি, তুমি বাঙালির বুকের স্বপ্ন আত্মার অমোঘ ঘ্রাণ।
তোমার মৃত্যু নেই, ক্ষয় নেই, তুমি ছিলে, তুমি থাকবে।
শেখ মুজিব তুমি বীর প্রসবিনী, বাংলায় ছন্দবন্ধ হৃদয় সঙ্গীত।
চির বিপ্লবী সত্ত্বা। তুমি দুর্বিনীত বাঙালির সংগ্রামের প্রতীক।
যুগে যুগে তোমার আবির্ভাব, নানা নামে তোমার পরিচয়।
কখনো তুমি সিরাজদ্দৌলা,
কখনো তিতুমীর কখনো তুমি ক্ষুদিরাম বা সূর্যসেন,
কখনো তুমি ঈশা খাঁ কখনো সুভাষ বসু,
কখনো তুমি শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক,
কখনো সোহরাওয়ার্দী, কখনো মাওলানা ভাসানী,
কখনো শেখ মুজিব।
কখনো তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ইংরেজ ভাড়াটিয়া মীরজাফর,
কখনো সা¤্রাজ্যবাদী বৃটিশ,
কখনো মার্কিন ।
তোমার বুকে ছোড়া বসার মোহাম্মদী বেগ।
কখনো গুলি চালায় ফারুক ডালিম।
সহসা গভীর রাতে দেশদ্রোহী ঘাতকের হাতে দেশ প্রেমে
দৃপ্ত প্রাণ রক্তঢালে সূর্যের স্বাক্ষাতে,
কখনো সিরাজ নামে গঙ্গা তীরের মুর্শিদাবাদের
কখনো মুজিব নামে বুড়িগঙ্গার তীরবর্তী ঢাকা।
শেখ মুজিব, মহাকালের অমোঘ নিয়মে স্থান বদলায়।
কিন্তু বেঈমান ঘাতকের নির্ধারিত লক্ষ্য থাকে
তোমারই বুকের উপর,
কারন তুমি যে বাংলার বিবেক,
তোমার কন্ঠেই যে যুগে যুগে গর্জে উঠে
মুক্তিকামী বাংলার অমোঘ আত্মঘোষনা।
কিন্তু বৃটিশ ও মার্কিনীরা,
মীরজাফর মোস্তাক,
মোহাম্মদী বেগম,
ফারুক, ডালিম,
নুরেরা জানেনা তোমার মৃত্যু আছে বিনাশ নেই।
বিপর্যয় আছে পরাভব নেই।
প্রতিটি মৃত্যুই ঘটায় তোমার রাজনৈতিক পুনঃজন্মের উর্বর পলিমাটি,
তোমার আত্মদানই তোমার পুনরুত্থানের পবিত্র অঙ্গীকার শেখ মুজিব।
বাঙালির দুর্জয়, সৌর্য বীর্যের ঔধার্যের অপূর্ব সমন্বয়ে তোমার সৃষ্টি।
এই দুর্লভ গুনের সমাবেশই তুমি মৃত্যু ভয়হীন দেশ প্রেমিক বাঙালির মুক্তির পথের দিশারি,
মহা জননেতা জনগনের বন্ধু, বাংলার বন্ধু
তোমার জন্ম একটি দেশকে স্বাধীন করার জন্য।
যুগ যুগ ধরে শোষিত বঞ্চিত বাঙালি জাতিকে
সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে এগিয়ে নেয়ার জন্য।
ইতিহাসের বিশিষ্ট এক পবিত্র দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই
তুমি দেশি বিদেশি শত্রুর রোষানলে পড়ে হয়েছে বঞ্চিত,
স্বজাতির সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে শোষনহীন,
সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য দ্বিতীয় বিপ্লবের সূচনা করতে গিয়েই
তোমাকে স্ব-পরিবারে জীবন দিতে হয়েছে।
৭৫ এর ১৫ আগস্ট তোমার মৃত্যু জাতীয় মুক্তির রণক্ষেত্রে
লড়তে লড়তে জাতীয় বীরের মৃত্যু।
তোমাকে হত্যা করে যে জগদ্দল পাথর বাঙালির বুকে চেপে বসেছিল
তোমার আদরের দুলারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে
বাংলার জাগরণ তা অপসারণ করেছে।
চক্রান্তকারীরা নতুন করে চক্রান্তের জাল বুনে চলছে
দেশের স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্ব ধ্বংস করার।
জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জাতির স্বার্থে
আজ বঙ্গবন্ধু তোমার পুনরুত্থান বড় বেশি প্রয়োজন।
নিষ্ঠুর মৃত্যু তোমার দৈহিক সত্ত্বা বিলুপ্ত করে দিয়েছে সন্দেহ নেই।
কিন্তু বাঙালির দুর্জয় সাহস, বিবেক,
সংগ্রাম আর বিপ্লবের প্রতীক হিসাবে তোমার
কালজয়ী সত্ত্বার তো কোন মৃত্যু নেই,
বাংলার ঘরে ঘরে আবার সেই বিপ্লবী মুজিবের পুর্নজন্ম হউক।
ফিরে এসো শেখ মুজিব। দুর্বিনীত চেতনা হয়ে,
বিপ্লবী সত্ত্বা হয়ে আপোষহীন সংগ্রাম হয়ে,
মৃত্যু ভয়হীন বাঙালি হয়ে আবার ফিরে এসো
এই বাঙলায় কোটি বাঙ্গালীর ঘরে ঘরে।
Leave a Reply